গরু কুরবানি করা নিয়ে এ অঞ্চলের মুসলমানদের আছে দুঃসহ ইতিহাস।
.
আপনি জানেন? বাংলাদেশে ঈদুল আযহার নামটাও বদলে গিয়েছিল । মুসলিমরা নিজেদের ইচ্ছে মতো পশু কুরবানির অধিকার থেকে ছিল বঞ্চিত । হি\ন্দু জমিদারদের শো,ষণের ভয়ে এ অঞ্চলের মুসলিম পূর্বপুরুষেরা ‘বকরি-খাসি’ কুরবানি করতে বাধ্য হতো।
.
ইচ্ছে হলেও বড় একটি গরু কুরবানি করে আত্মীয়, গরিব, অসহায়দের মাঝে ব্যাপকভাবে বিতরণের পথ ছিল রুদ্ধ। চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল গরু জ%বাইয়ের ওপর কড়াকড়ি নিষেধাজ্ঞা। তাই কেবলই ‘বকরি-খাসি’ কুরবানি দেওয়ার প্রচলন চলতে থাকায়, ভার/তবর্ষে ঈদুল আযহার নাম বদলে হয়ে যায় “ বকরি ঈদ/বকরা ঈদ ”।
.
সাহিত্যিক আবুল মনসুর আহমদ নিজ আত্মজীবনীতে লিখেন: 'বক্রা ঈদে গরু কুরবানি কেউ করিত না। কারণ জমিদারের তরফ হইতে উহা কড়াকড়িভাবে নিষিদ্ধ ছিল। খাসি-বকরি কুরবানি করা চলিত।'
.
আজ থেকে ১১৮ বছর আগে চাঁদপুর জেলার কথা। এক ঈদুল আযহায় ৩ জন মিলে গরু কুরবানি করেন। এতে ‘গোপাল চন্দ্র মজুমদার’ নামে এক হি*ন্দু লোক মামলা করে তিনজনের বিরুদ্ধে। শেষমেশ গরু কুরবানি করা ও পানিতে গরুর মাংস ধোয়ার অযুহাতে ৩ জন মুসলিমকেই দ,ন্ড দেয় জেলা হাকিম ‘জগদীশচন্দ্র সেন’। তাঁদের একজনকে দেওয়া হয় ১ মাসের কারাদন্ড। বাকী দুইজনকে মোটা অঙ্কের জরিমানা করা হয়। [‘বাংলাদেশের উৎসব’ বইয়ের ৩৪ তম পৃষ্ঠায় এ বিষয়ে আলোচনা রয়েছে]।
.
এধরনের শাস্তির ভয়ে গরু কুরবানি করার রেওয়াজ বন্ধ হয়ে যায়। জমিদারের ভয়ে গরু কুরবানির নামও মুখে আনতে ভয় পেত এই অঞ্চলের মুসলিম পূর্বপুরুষেরা।
.
সেসময়ও এ ধরনের শো.ষণ,জুলুমের বিরুদ্ধে ইসলামি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ও মাসিকপত্রে লেখালেখি চলতো। টাঙ্গাইল থেকে প্রকাশিত বিখ্যাত মাসিকপত্র “আখবারে এসলামীয়া”- এর সম্পাদক ছিলেন মৌলবী নঈমুদ্দীন। বিচক্ষন এই আলেম ও সম্পাদক একবার এক জনসভায় বক্তব্য দেন।
.
তিনি সেখানে গরু জ%বাইয়ের বিরোধিতাকারী এক মুসলিম সাহিত্যিকের তীব্র সমালোচনা করেন। তখন নঈমুদ্দীন সাহেবকে মানহানী মামলা দেওয়া হয়। ভালো খবর হলো- মৌলবীর পক্ষে দাঁড়িয়ে যায় স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার সাধারন ছাত্ররা। ঢাকা কলেজ ( Dhaka College, মাদ্রাসা, পোগোজ স্কুল (বর্তমান Pogose Laboratory School and College) , জগন্নাথ কলেজ ( বর্তমান Jagannath University) , সার্ভে কলেজ, ঢাকা মেডিক্যালের মেধাবী ছাত্ররা ঢাকা শহরে মৌলবী নঈমুদ্দীনের পক্ষে জনসভার আয়োজন করে৷
.
সচেতন ছাত্র-জনতার এই আয়োজন শেষমেশ মৌলবী নঈমুদ্দীনের বিরুদ্ধে করা মামলাকে মিটিয়ে দেয়। সেই সাহিত্যিক ব্যাপারটি আপোষ করে নেন। এই ইতিহাস আজ থেকে শতাধিক বছর আগের। [বাংলা একাডেমীর ‘বাংলাদেশে উৎসব’ বইতে এই ঘটনা উল্লেখ রয়েছে]
.
এখন হয়তো বাংলাদেশে অল্পকিছু দশক ধরে গরু কুরবানি করা যায়। কিন্তু আগে ব্যাপারটা এতটা স্বাভাবিক ছিল না। যাইহোক ইতিহাস জানা থাকা দরকার। কারণ ইতিহাস ঘুরে ঘুরে বারবার আসে।
গরু কুরবানি করা নিয়ে এ অঞ্চলের মুসলমানদের আছে দুঃসহ ইতিহাস। . আপনি জানেন? বাংলাদেশে ঈদুল আযহার নামটাও বদলে গিয়েছিল । মুসলিমরা নিজেদের ইচ্ছে মতো পশু কুরবানির অধিকার থেকে ছিল বঞ্চিত । হি\ন্দু...
www.facebook.com